খুলনা, বাংলাদেশ | ২১ ফাল্গুন, ১৪৩১ | ৬ মার্চ, ২০২৫

Breaking News

ইফতারে বেঁচে যাওয়া কমলা খাওয়ায় এতিম কিশোরকে পেটালেন শিক্ষক

গেজেট ডেস্ক

হাসপাতালের মেঝেতে ব্যথা আর যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে এতিমখানার কিশোর সাগর হোসেন (১৬)। লাঠির অসংখ্য আঘাতে দগদগে ক্ষতচিহ্ন তার শরীরে। শরীরের প্রতিটি অংশের এই ক্ষত দেখে নিজেকে সামলাতে পারছেন না তার মা। ছেলের ওপর নির্যাতনের ক্ষতগুলোতে হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন তিনি। আর অঝোরে কাঁদছেন।

ঝিনাইদহ সদর উপজেলার মথুরাপুর আদর্শ এতিমখানার শিক্ষার্থী সাগর হোসেনকে নির্যাতনের পর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বুধবার (৫ মার্চ) সকালে এতিমখানার ভেতরেই এমন নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর থেকে পলাতক রয়েছেন অভিযুক্ত শিক্ষক ইমরান হাওলাদার।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এতিমখানায় ইফতারে থেকে যাওয়া মাত্র দুই টুকরো কমলা খেয়েছিল কিশোর সাগর হোসেন। এরপর শুরু হয় নির্যাতন। তাকে দড়ি দিয়ে হাত-পা বেঁধে গাছের ডাল আর ব্যাট দিয়ে বেধড়ক মারপিট করেন শিক্ষক ইমরান হাওলাদার। এতে সাগরের সারা শরীরে দগদগে ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। সাগরের সাথে এতিমখানার আরেক শিশুকেও মারপিট করেন। তিনি প্রায়ই এতিমখানার এতিমদের ওপর নির্যাতন করে থাকেন। এমন অমানবিক নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি জানিয়েছেন স্বজন ও এলাকাবাসী।

ভুক্তভোগী সাগর হোসেনের মা মধুমালা খাতুন গণমাধ্যমকে জানান, গত সোমবার (৩ মার্চ) এক ব্যক্তি এতিমখানায় ইফতারের আয়োজন করেন। ইফতার শেষে কিছু কমলা বেঁচে যায়। রাতে সাগর সেখান থেকে দুই টুকরো কমলা খায়। এ কারণে বুধবার ফজরের নামাজ শেষে তাকে মেহগনি গাছের ডালের সাথে দড়ি দিয়ে হাত-পা বেঁধে ব্যাট দিয়ে বেধড়ক মারপিট করেন শিক্ষক ইমরান হাওলাদার। মারপিটে সাগর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়রা তাদের খবর দেন। পরে তারা তাকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। তিনি অভিযুক্ত শিক্ষক ইমরান হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবি জানান।

এতিমখানার সুপার জহুরুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি অনাকাঙিক্ষত। এতিম কিশোর সাগরকে এভাবে মারপিটের ঘটনায় শিক্ষক ইমরান হাওলাদারকে বরখাস্ত করা হয়েছে। ঘটনার পরপরই তিনি পালিয়ে গেছেন। তার বিরুদ্ধে থানায় আমি নিজে বাদী হয়ে অভিযোগ দিয়েছি।

ঝিনাইদহ সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এতিমখানার শিক্ষার্থী সাগরকে মারধরের ঘটনায় এতিমখানার সুপার থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগ পাওয়ার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ইতোমধ্যে ওই শিক্ষককে এতিমখানা থেকে বরখাস্ত করেছে কর্তৃপক্ষ।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!